ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। যেকোনো যানবাহনে এলে এ পথটি পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে। তবে গত কয়েক মাস ধরে সড়কটির বেহাল দশার কারণে পথটি পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগে। যানজটের কারণে ভোগান্তি চরমে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশ পরিদর্শনে এসে এমন যানজটে আটকা পড়েন খোদ সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরে বাধ্য হয়ে তিনি মোটরসাইকেলে চড়ে বাকি পথ আসেন। গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ১১টায় তিনি আশুগঞ্জ থেকে রওনা দেন। পরে দুপুর ১টার দিকে তিনি বিশ্বরোড মোড়ে আসেন। আট-১০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে তিনি বিশ্বরোড নামেন। তবে তার গাড়ি বহর তখনও ছিল আশুগঞ্জ এলাকাতেই। তিনি বাহাদুরপুর থেকে মোটরসাইকেলে ওঠেন। এর আগে সকালে তিনি মহানগর প্রভাতী ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে নামেন। পরে সড়ক পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসার পথে আশুগঞ্জের হোটেল উজানভাটিতে যাত্রাবিরতি করেন। সেখান থেকে যাত্রা শুরু করলে আশুগঞ্জের বাহাদুরপুর থেকে তিনি দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়েন উপদেষ্টা। এদিকে, দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ অংশে যানজটে আটকা পড়ে অবশেষে মোটরসাইকেলে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড মোড়ে এসে নাজুক মহাসড়কটি পরিদর্শন করেন। তিনি গতকাল বুধবার দুপুর ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড মোড়ে নাজুক মহাসড়কটি পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে সড়ক সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে তিনি গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ভৈরবে আসেন। পরে সড়কপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পৌঁছান। সেখান থেকে সকাল সোয়া ১০টায় তিনি আশুগঞ্জ হোটেল উজান ভাটি থেকে গাড়ি বহর নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোডের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এর মধ্যে আশুগঞ্জের সোহাগপুর, সোনারামপুর, সরাইলের বেড়তলা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের কবলে পড়েন। পরে তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলে করে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডে পৌঁছান। পরে মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন ১২ জন কর্মকর্তাকে ঢাকায় অফিসে না বসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ বিষয়ে অবহেলা করলে বা অফিসে না পাওয়া গেলে তাদের সাসপেন্ড করা হবে। উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগের গাফিলিত কারণে। এ বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধান করার কথা জানান। তিনি বলেন, বিশ্বরোড এলাকায় একটি উড়াল সেতু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ডিজাইন প্রণয়নসহ সার্বিক বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়কপথে যানজটের কারণে রেল পথে চাপ বেড়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করা হবে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হকসহ সড়ক সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৫১ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। তবে প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। এ অবস্থায় আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে করে তীব্র যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ধীরগতির কারণে মহাসড়কের এ অংশ পাড়ি দিতে যানবাহনগুলোর সময় লাগে ৪-৬ ঘণ্টা। বৃষ্টি হলেই সড়কটির বেহাল দশা হয়। অবস্থায় এই প্রকল্পের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশ পরিদর্শনে আসছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তাই গত রোববার থেকে সড়কের খানাখন্দের ভরাট শুরু করা হয়। এক পাশ বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ চালানোর ফলে গেল তিন দিন ধরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে আছে মহাসড়কে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে আরও বেশি যানজট তৈরি হয়েছে। আশুগঞ্জ থানার ওসি খায়রুল আলম জানান, উপদেষ্টা মহোদয় আশুগঞ্জ থেকে সরাইলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অবশেষে মোটরসাইকেল করে এসেছেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

যানজটে আটকা সড়ক উপদেষ্টা, ১২ কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস করার নির্দেশ
- আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৫ ১১:১৬:৫৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৫ ১১:১৬:৫৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ